উমর রা. এর হাদীসের ব্যাপারে আইশাহ রা. এর মন্তব্য
সহীহ মুসলিমে এসেছে-
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَلَمَّا مَاتَ عُمَرُ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَائِشَةَ فَقَالَتْ رَحِمَ اللهُ عُمَرَ وَاللهِ مَا حَدَّثَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ لَيُعَذِّبُ الْمُؤْمِنَ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ وَلَكِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ لَيَزِيدُ الْكَافِرَ عَذَابًا بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ وَقَالَتْ حَسْبُكُمْ الْقُرْآنُ (وَلاَ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى) قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ عِنْدَ ذَلِكَ وَاللهُ (هُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَى) قَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ وَاللهِ مَا قَالَ ابْنُ عُمَرَ شَيْئًا
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘উমার (রাঃ)-এর মৃত্যুর পর ‘আয়িশাহ্ (রাযি.)-এর নিকট আমি ‘উমার (রাঃ)-এর এ উক্তি (আত্মীয়-স্বজনের কান্নাকাটির কারণে মৃত ব্যক্তির উপর শাস্তি হয়) উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, আল্লাহ্ ‘উমার (রাঃ)-কে রহম করুন। আল্লাহ্র কসম! আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেননি যে, আল্লাহ্ ঈমানদার (মৃত) ব্যক্তিকে তার পরিজনের কান্নার কারণে আযাব দিবেন। তবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা‘আলা কাফিরদের আযাব বাড়িয়ে দেন তার পরিজনের কান্নার কারণে। অতঃপর ‘আয়িশাহ্ (রাযি.) বললেন, (এ ব্যাপারে) আল্লাহ্র কুরআনই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। (ইরশাদ হয়েছে) ‘বোঝা বহনকারী কোন ব্যক্তি অপরের বোঝা বহন করবে না’- (আন‘আম ১৬৪)। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ই (বান্দাকে) হাসান এবং কাঁদান। রাবী ইবনু আবূ মুলাইকাহ (রহ.) বলেন, আল্লাহ্র কসম! (এ কথা শুনে) ইবনু ‘উমার (রাঃ) কোন মন্তব্য করলেন না। [বুখারী: ১২৮৮, মুসলিম: ২০১৭, ২০১৮]
মুসলিমের অন্য বর্ণনায় এসেছে-
فَلَمَّا قَدِمْنَا لَمْ يَلْبَثْ أَمِيرُ الْمُؤْمِنِينَ أَنْ أُصِيبَ فَجَاءَ صُهَيْبٌ يَقُولُ وَاأَخَاهْ وَاصَاحِبَاهْ . فَقَالَ عُمَرُ أَلَمْ تَعْلَمْ أَوْ لَمْ تَسْمَعْ - قَالَ أَيُّوبُ أَوْ قَالَ أَوَلَمْ تَعْلَمْ أَوَلَمْ تَسْمَعْ - أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبَعْضِ بُكَاءِ أَهْلِهِ " . قَالَ فَأَمَّا عَبْدُ اللَّهِ فَأَرْسَلَهَا مُرْسَلَةً وَأَمَّا عُمَرُ فَقَالَ بِبَعْضٍ فَقُمْتُ فَدَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَحَدَّثْتُهَا بِمَا، قَالَ ابْنُ عُمَرَ فَقَالَتْ لاَ وَاللَّهِ مَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَطُّ " إِنَّ الْمَيِّتَ يُعَذَّبُ بِبُكَاءِ أَحَدٍ " . وَلَكِنَّهُ قَالَ " إِنَّ الْكَافِرَ يَزِيدُهُ اللَّهُ بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَذَابًا وَإِنَّ اللَّهَ لَهُوَ أَضْحَكَ وَأَبْكَى وَلاَ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى " . قَالَ أَيُّوبُ قَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ حَدَّثَنِي الْقَاسِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ لَمَّا بَلَغَ عَائِشَةَ قَوْلُ عُمَرَ وَابْنِ عُمَرَ قَالَتْ إِنَّكُمْ لَتُحَدِّثُونِّي عَنْ غَيْرِ كَاذِبَيْنِ وَلاَ مُكَذَّبَيْنِ وَلَكِنَّ السَّمْعَ يُخْطِئُ .
...এরপর যখন আমরা মদীনায় পৌঁছলাম, অল্প সময়ের মধ্যেই আমীরুল মু'মিনীন উমার (রাযিঃ) আহত হলেন। সুহায়ব (রাযিঃ) তাকে দেখতে এসে দীর্ঘ-নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, আহ! ভাই উমার! আহ সঙ্গী উমার! "উমর (রাযিঃ) শুনে বললেন, হে সুহায়ব, "তুমি কি জান না, তুমি কি শোন না।" রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মৃত ব্যক্তিকে তার পরিবার-পরিজনের কান্নার দরুন শান্তি দেয়া হয়।
অতঃপর আমি উঠে গিয়ে আয়িশাহ (রাযিঃ) এর নিকট গেলাম এবং তাকে ইবনু উমার (রাযিঃ) এর উক্তি সম্পর্কে জানালে তিনি বললেনঃ না, আল্লাহর কসম রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও এরূপ বলেননি যে, মৃত ব্যক্তিকে কারো কান্নার দরুন আযাব দেয়া হবে বরং তিনি বলেছেন, কাফির ব্যক্তির আযাব আল্লাহ তা'আলা তার পরিবার-পরিজনের কান্নাকাটির দরুন আরও বাড়িয়ে দেন এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহই হাসান এবং কাঁদান। "আর কোনো বহনকারীই অন্যের বোঝা বহন করবে না"- (সূরাহ আল ইসরা/ ইসরাঈল ১৭ঃ ১৫)।
আইয়ূব (রহঃ) বলেন, ইবনু আবূ মুলায়কাহ বলেছেন, আমাকে কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ জানিয়েছেন, তিনি বলেন, 'আয়িশাহ রাযি. এর নিকট যখন উমর রাযি. ও ইবনু উমার-এ বক্তব্য পৌছল তখন তিনি বললেন, তোমরা আমাকে এমন দু' ব্যক্তির কথা শুনাচ্ছ, যারা মিথ্যাবাদী নন আর তাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্নও করা যায় না। তবে কখনও শুনতে ভুল হয়ে যেতে পারে। [মুসলিম: ২০১৭]
আরো এসেছে-
فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَلَمَّا مَاتَ عُمَرُ ذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَائِشَةَ فَقَالَتْ يَرْحَمُ اللَّهُ عُمَرَ لاَ وَاللَّهِ مَا حَدَّثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ يُعَذِّبُ الْمُؤْمِنَ بِبُكَاءِ أَحَدٍ " . وَلَكِنْ قَالَ " إِنَّ اللَّهَ يَزِيدُ الْكَافِرَ عَذَابًا بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ " قَالَ وَقَالَتْ عَائِشَةُ حَسْبُكُمُ الْقُرْآنُ ( وَلاَ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى) قَالَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ عِنْدَ ذَلِكَ وَاللَّهُ أَضْحَكَ وَأَبْكَى . قَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ فَوَاللَّهِ مَا قَالَ ابْنُ عُمَرَ مِنْ شَىْءٍ
ইবনু আব্বাস রাযি. বলেন, উমর রাযি. ইনতিকাল করলে আমি অত্র হাদীসটি আয়িশাহ রাযি. এর নিকট ব্যক্ত করলাম। তিনি বললেন, উমর রাযি.কে আল্লাহ রহমাত করুন। কখনও না আল্লাহর কসম! রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও এমন হাদীস ব্যক্ত করেননি যে, ঈমানদার ব্যক্তিকে কারো কান্নাকাটির দরুন শাস্তি দেয়া হবে। বরং তিনি বলেছেনঃ কাফির ব্যক্তির পরিবার-পরিজনের কান্নাকাটির দরুন আল্লাহ তা'আলা তার আযাবকে আরো বাড়িয়ে দিবেন। এছাড়া আয়িশাহ (রাযিঃ) আরও বলেছেন, তোমাদের জন্য আল্লাহর কুরআনই যথেষ্ট। কুরআনে ঘোষিত হয়েছে, “কোন ব্যক্তিই অন্যের পাপের বোঝা বহন করবে না।" বর্ণনাকারী বলেন, এ সময় ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) বললেন, "এবং আল্লাহই হাসান, আল্লাহই কাঁদান।” ইবনু আবূ মুলায়কাহ বলেন, আল্লাহর কুসম! ইবনু উমর (রাযিঃ) এর ওপর আর কোন কথাই বলেননি। [মুসলিম: ২০১৮]
নাসাঈর বর্ণনায় এসেছে-
فَلَمَّا دَخَلْنَا الْمَدِينَةَ أُصِيبَ عُمَرُ فَجَلَسَ صُهَيْبٌ يَبْكِي عِنْدَهُ يَقُولُ وَاأُخَيَّاهُ وَاأُخَيَّاهُ . فَقَالَ عُمَرُ يَا صُهَيْبُ لاَ تَبْكِ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِنَّ الْمَيِّتَ لَيُعَذَّبُ بِبَعْضِ بُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ " . قَالَ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِعَائِشَةَ فَقَالَتْ أَمَا وَاللَّهِ مَا تُحَدِّثُونَ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ كَاذِبَيْنِ مُكَذَّبَيْنِ وَلَكِنَّ السَّمْعَ يُخْطِئُ وَإِنَّ لَكُمْ فِي الْقُرْآنِ لَمَا يَشْفِيكُمْ (أَلاَّ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى) وَلَكِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ اللَّهَ لَيَزِيدُ الْكَافِرَ عَذَابًا بِبُكَاءِ أَهْلِهِ عَلَيْهِ "
..যখন আমরা মদীনায় প্রবেশ করলাম এবং উমর (রাঃ) আঘাত প্রাপ্ত হলেন, তখন সুহায়ব (রাঃ) তার সামনে বসে ক্রন্দন করছিলেন এবং বলছিলেন, হে আমার প্রিয় ভ্রাতা! হে আমার প্রিয় ভ্রাতা! তখন উমর (রাঃ) বললেন, হে সূহায়ব তুমি ক্রন্দন করো না, যেহেতূ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, মৃত ব্যক্তিকে তার জন্য তার আত্নীয়-স্বজনের কোনো কোনো ক্রন্দনের কারণে শাস্তি দেওয়া হয়।
সুহায়ব (রাঃ) বলেন, আমি এ ঘটনা আয়িশা (রাঃ)-এর সামনে উল্লেখ করলে তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! তোমরা এ রকম হাদীস বর্ণনা করছো না দু’জন মিথ্যাবাদীর থেকে। তবে তিনি শ্রবনে কখনো ভুল করেন। নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য কুরআনে এমন আয়াত আছে যা তোমাদের আশ্বস্ত করে দেবে- أَلاَّ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى অর্থাৎ কোনো বহনকারী অন্যের পাপের বোঝা বহন করবে না। হ্যাঁ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা বলেছেন যে, কাফিরের জন্য তার আত্নীয় স্বজনের ক্রন্দনের কারণে আল্লাহ তা'আলা তার শাস্তি বৃদ্ধি করে থাকেন। [সুনানে নাসাঈ: ১৮৬১]
#Debateforsunnah • #Lubaabswritings • #Ahnaafwritersworld
❤️❤️
উত্তরমুছুনজাজাকাল্লাহ
উত্তরমুছুন